হ্যালোইন কি?
হ্যালোইন “অল হ্যালোজ ইভ”-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। হ্যালোইন মূলত খ্রিস্টধর্মের একটি বার্ষিক উৎসব যা প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ তারিখ মৃত আত্মাদের স্মরণে পালিত হয়। এটি বিশ্বাস করা হয় যে, এ-দিন মৃতদের আত্মা তাদের বাড়িতে ফিরে আসে, তাই তারা ভৌতিক পোশাক পরিধান করে এবং আত্মাদের তাড়ানোর জন্য আগুন জ্বালায়।
হ্যালোইন” বা “হ্যালোউইন” শব্দটির উৎপত্তি ১৭৪৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। “হ্যালোইন” শব্দের অর্থ “শোধিত সন্ধ্যা” বা “পবিত্র সন্ধ্যা”। এটি স্কটিশ ভাষার শব্দ “অল হ্যালোজ’ ইভ” থেকে আগত। সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়ে “হ্যালোজ’ ইভ” শব্দটি “হ্যালোইন”-এ রূপান্তরিত হয়।
হ্যালোইন উৎসবে পালিত কর্মকাণ্ডের মধ্যে আছে অগ্ন্যুৎসব, আজব পোষাকের পার্টি, ভৌতিক স্থান ভ্রমণ, হরর মুভি দেখা ইত্যাদি। আইরিশ ও স্কটিশ অভিবাসীরা ১৯শ শতকে এই হ্যালোইন উৎসব উত্তর আমেরিকাতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলিও হ্যালোইন উদ্যাপন করা শুরু করে।
বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের অনেকগুলি দেশে হ্যালোইন পালিত হয়, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, এবং যুক্তরাজ্য। এছাড়া এশিয়ার জাপান, চীন, এবং অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডেও হ্যালোইন পালিত হয়।
হ্যালোইন উৎসব কাদের?
অনেকের মতে, “হ্যালোইন” বা “অল্ হ্যালোজ্ ইভ্” হলো খ্রিস্টধর্মের একটি বার্ষিক উৎসব যা প্রাথমিকভাবে কেলটিক জাতির ফসল কাটার উৎসব দ্বারা প্রভাবিত। অন্যান্য পণ্ডিতদের মতে, এই উৎসবটির স্বতন্ত্র উৎপত্তি সামহেন থেকে এবং এর মূলে সরাসরি খ্রিস্টধর্মের প্রভাব বিদ্যমান।
প্রায় ২০০০ বছর আগে বর্তমান আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও উত্তর ফ্রান্সে বসবাস করতো কেল্টিক জাতি। কেল্টিক জাতির সম্প্রদায়ের লোকদের ধারণা ছিলো অক্টোবরের শেষ দিনের (৩১ অক্টোবর) রাত সবচেয়ে খারাপ। এই রাতে সব প্রেতাত্মা ও অতৃপ্ত আত্মারা মানুষের ক্ষতি করতে পারে। আর তাই কেল্টিক জাতির সদস্যরা এই রাতে বিভিন্ন ধরনের ভূতের মুখোশ ও কাপড় পরতো।
তারা নির্ঘুম রাত কাটাতে আগুন জ্বালিয়ে মুখোশ পরে বৃত্তাকারে একসঙ্গে ঘুরতেন ও মন্ত্র যপতেন। আর সময়ের পরিক্রমায় কেল্টিক জাতির ‘সাহ-উইন’ উৎসবই বর্তমানে ‘হ্যালোইন’ উৎসব হিসেবে পালিত হচ্ছে।
২০২৩ সালে হ্যালোইন কখন?
হ্যালোইন প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর পালিত হয়। ২০২৩ সালে ৩১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত হবে।