কম্পিউটারের গঠন, কাজের ধরন ও প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে কম্পিউটারগুলোকে কয়েকটি প্রকারে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড কম্পিউটার অন্যতম। মূলত কোন একটি বিশেষ উদ্দেশ্য সম্পাদনের জন্য এই কম্পিউটারগুলো তৈরি করা হয়।
১৯৬১ সালে, প্যাকার্ড বেল নামক ব্যক্তি বিশ্বের প্রথম ডেস্কটপ হাইব্রিড কম্পিউটিং সিস্টেম হাইকম্প ২৫০ (Hycomp 250) তৈরি করেন। এছাড়া ১৯৬৩ সালে Enterprise Application Integration বা EAI সমন্বিত হাইব্রিড কম্পিউটার হাইডাক ২৪০০ (HYDAC 2400) প্রকাশ করে। ১৯৮০ এর দশকে, Marconi Space and Defence Systems Limited তাদের স্টারগ্লো হাইব্রিড কম্পিউটার তৈরি করেছিল।
হাইব্রিড কম্পিউটার কি?
হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid computer) হচ্ছে এনালগ কম্পিউটার এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের সমন্বয়ে গঠিত কম্পিউটার। এটিকে সংকর জাতীয় কম্পিউটারও বলা হয়। এসকল কম্পিউটারের ডাটা এনালগ প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করে এবং সংগৃহীত সংখ্যায় রুপান্তর করে প্রক্রিয়াকরণের জন্য ডিজিটাল অংশে প্রেরণ করে।
হাইব্রিড কম্পিউটার হল এমন কম্পিউটার যা এনালগ এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। এর ডিজিটাল উপাদানটি সাধারণত নিয়ন্ত্রণকারী হিসাবে কাজ করে এবং যৌক্তিক ও সংখ্যাসূচক ক্রিয়াকলাপের ফলাফল প্রদান করে। অ্যানালগ উপাদানটি প্রায়শই পার্থক্যমূলক সমীকরণ এবং অন্যান্য গাণিতিক জটিল সমীকরণগুলোর সমাধানে কাজ করে।
হাইব্রিড কম্পিউটার হল একটি বিশেষ ধরনের কম্পিউটার যেটিতে ডিজিটাল এবং এনালগ কম্পিউটারের উভয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যামান রয়েছে। হাইব্রিড কম্পিউটারগুলো যৌক্তিক এবং প্রযুক্তিগত গণনাগুলোর সমাধান করার পাশাপাশি পরিবর্তশীল সমীকরণের প্রক্রিয়াকরণের জন্য বড় সংস্থাসমূহে ব্যবহার করা হয়।
হাইব্রিড কম্পিউটারের কার্যাবলী
হাইব্রিড কম্পিউটারগুলো নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য তৈরি করা হয়। সুতরাং, প্রয়োজনীয়তা অনুসারে নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করার জন্য বিভিন্ন ধরণের উপাদান এমবেড করা হয়। হাইব্রিড কম্পিউটারগুলো দ্রুত সঠিক ফলাফল দেয়ার জন্য অধিক পরিচিত। এছাড়াও এটির বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। যেমন:
- এটি দ্রুত প্রসেসিং এবং সুনির্দিষ্ট ফলাফল প্রদান করে।
- এটি রিয়েল-টাইমে বড় সমীকরণগুলো সমাধান করতে সহায়তা করে।
- এটি অন-লাইন ডেটা প্রসেসিং
হাইব্রিড কম্পিউটারগুলো তুলনামূলক বেশি ব্যয়বহুল কারণ এতে বেশ কয়েকটি নেটওয়ার্ক, নোড, হাব, ব্যয়বহুল সার্কিটসহ আরও অনেক কিছু ব্যবহার করা হয়।
হাইব্রিড কম্পিউটারের ব্যবহার
বর্তমানে দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে হাইব্রিড কম্পিউটারের ব্যবহার বিস্তর বেড়ে চলছে। যেমন:
- পেট্রোল পাম্পে জ্বালানীর পরিমানকে মুদ্রার হারে রূপান্তর করতে।
- রোগীর হার্টবিট পরিমাপে
- বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে
- শিল্প প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রণ ইউনিটে।
- প্রতিরক্ষা খাত
- এয়ারলাইন্স সেক্টরে চাপ, তাপ, গতি ইত্যাদির ফলাফল প্রকাশ করতে।
- জাহাজে দিক নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণে
- সিমেন্ট প্ল্যান্ট
- গ্যাস পাম্প স্টেশন
- রাডার সিস্টেম
- বৈজ্ঞানিক গণনা
- আবহাওয়া সিস্টেম গণনা
- পারমাণবিক চুল্লি পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণ
- ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম মেশিন
- ইকোকার্ডিওগ্রাম মেশিন
- আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন
- সিটি স্ক্যান মেশিন
- এটিএম মেশিন
- হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)
- গ্যাস এবং বিদ্যুত চালিত গাড়িতে
- সেল ফোনে যা অ্যানালগ সাউন্ডকে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করতে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link