যেকোন পরিসংখ্যানগত বা তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে তথ্য সংগ্রহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় এই তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যেমন প্রাথমিক ডেটা এবং মাধ্যমিক ডেটা সংগ্রহ।
প্রাথমিক ডেটা হল এমন একটি ডেটা যা গবেষক দ্বারা প্রথমবার সংগ্রহ করা হয়। সেকেন্ডারি ডেটা হল অন্যদের দ্বারা ইতিমধ্যেই সংগৃহীত ডেটা। নিম্মে সেকেন্ডারি ডেটার সংজ্ঞা ও এর বিভিন্ন উৎস সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
সেকেন্ডারি ডেটা কি?
সেকেন্ডারি ডেটা বা মাধ্যমিক উপাত্ত হলো সেই তথ্য যা ইতিমধ্যেই প্রাথমিক উৎসের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি এমন এক ধরনের তথ্য যা পূর্বে সংগ্রহ করা হয়েছে।
সেকেন্ডারি ডেটা হল সেই ডেটা যা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং যেটি অন্যান্য উৎস থেকে সহজেই পাওয়া যায়। এই ধরনের ডেটা প্রাথমিক ডেটার তুলনায় সস্তা এবং দ্রুত পাওয়া যায়।
যখন কোন ডেটা পুন:ব্যবহার করা হয় তখন এটি প্রথম গবেষণার জন্য প্রাইমারি ডেটা এবং দ্বিতীয় গবেষণার জন্য সেকেন্ডারি ডেটা হিসেবে বিবেচিত হয়। সেকেন্ডারি ডেটার উৎসের মধ্যে রয়েছে বই, ব্যক্তিগত উৎস, জার্নাল, সংবাদপত্র, ওয়েবসাইট, সরকারি রেকর্ড, ব্লগ, ডায়েরি, ভিডিও ডকুমেন্ট ইত্যাদি।
সেকেন্ডারি ডেটার উৎস
প্রাথমিক ডেটার তুলনায় সেকেন্ডারি ডেটা সহজেই পাওয়া যায়। ফলে খুব কম গবেষণা এবং কম জনবল প্রয়োজন হয়। বর্তমানে ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের ফলে, সেকেন্ডারি ডেটার উৎসগুলি আরও সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য হয়ে উঠেছে। নিম্মে মাধ্যমিক বা সেকেন্ডারি ডেটার বিভিন্ন উৎস সমূহ বর্ণনা করা হল।
১. বই (Books)
তথ্য সংগ্রহের অন্যতম প্রধান ও প্রচলিত মাধ্যম হল বই। গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণে বই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণার জন্য সেই বিষয় কেন্দ্রীক বই খুঁজতে হবে। বইগুলো যখন নির্বাচিত হয়, সেগুলো তথ্যের একটি উৎস এবং একটি সাহিত্য পর্যালোচনা তৈরিতে সহায়ক হতে পারে।
আরো পড়ুন, প্রাইমারি ডেটা কী? উৎস ও সংগ্রহের পদ্ধতি
২. জার্নাল (Journal)
তথ্য সংগ্রহের আরেকটি সহজলভ্য মাধ্যম হচ্ছে বিভিন্ন জার্নাল। এর কারণ হল জার্নালগুলো নিয়মিতভাবে নতুন প্রকাশনার সাথে নিয়মিতভাবে আপডেট করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, আমরা গবেষণার জন্য ‘‘পরিমাণগত তথ্যের জন্য সেকেন্ডারি ডেটা কালেকশন’’ শিরোনামে একটি জার্নাল রাখতে পারি।
৩. সংবাদপত্র (Newspaper)
সংবাদপত্রের মাধ্যমে সংগ্রহিত তথ্য সাধারণত খুব নির্ভরযোগ্য ও সহজলভ্য। অতএব, এটি মাধ্যমিক ডেটা সংগ্রহের অন্যতম প্রামাণিক উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। সাধারণত সংবাদপত্রে বৈজ্ঞানিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষামূলক তথ্য লেখা হয়ে থাকে। অতএব, সংবাদপত্র সেকেন্ডারি তথ্য সংগ্রহের অন্যতম উৎস হতে পারে।
৪. ওয়েবসাইট (Websites)
যদিও ওয়েবসাইটের তথ্য অন্যান্য উৎসের তুলনায় বিশ্বাসযোগ্য নাও হতে পারে। যাইহোক, কিছু নিয়ন্ত্রিত ও বিশ্বাসযোগ্য ওয়েবসাইট আছে যা শুধুমাত্র সত্যিকারের তথ্য শেয়ার করে। তাই, সেকেন্ডারি ডেটার একটি অন্যতম উৎস হতে পারে এই ওয়েবসাইট।
৫. ব্লগ (Blog)
ইন্টারনেটে তথ্যের জন্য সবচেয়ে সাধারণ অনলাইন উৎসগুলির মধ্যে ব্লগ অন্যতম একটি মাধ্যম। যদিও ওয়েবসাইটের চেয়ে ব্লগের তথ্য কম বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে। কারণ আজকাল কার্যত প্রত্যেকেই একটি ব্লগের মালিক হতে পারে যেখানে তার নিজের ব্যক্তিগত অভিমত প্রদান করে।
আরো পড়ুন, তথ্য ও উপাত্ত কাকে বলে? এদের পার্থক্য
৬. ডায়েরি (Diaries)
ডায়েরি বা ব্যক্তিগত রেকর্ড তথ্য সংগ্রহের জন্য খুব কমই ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি সেকেন্ডারি ডেটার একটি উৎস। ডায়েরিগুলি সাধারণত ব্যক্তিগত হয় যেখানে লোকেরা তাদের জীবনের নির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে লিখে থাকে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরি যাতে নাৎসি যুদ্ধের সঠিক রেকর্ড ছিল। পরে, এই রেকর্ড ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে ব্যবহার হয়েছিল।
৭. সরকারি রেকর্ড (Government Records)
সরকারি রেকর্ড সেকেন্ডারি ডেটার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বাসযোগ্য উৎস। সরকারি বিভিন্ন সেক্টরে বিশেষ তথ্য সংগ্রহ করা থাকে। এর মধ্যে কিছু রেকর্ড, যেমন আদমশুমারি তথ্য, স্বাস্থ্য তথ্য, শিক্ষা তথ্য ইত্যাদি। সরকারি এই তথ্যগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক, পরিকল্পিত, নির্ভরযোগ্য মাধ্যমিক তথ্য।
আরো পড়ুন, গবেষণার প্রকারভেদ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link