ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। এ আন্দোলন বাঙালির অসাম্প্রদায়িক জাতীয় চেতনার ভিত্তি ও ভাষা ভিত্তিক জাতীয়তা সুদৃঢ় করে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই উর্দু বনাম বাংলা ভাষা নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলিম নেতৃবৃন্দের মধ্যে বির্তক দেখা দেয়।
তৎকালীন গভর্নর জেনারেল মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘােষণা করলে এ বিতর্ক আন্দোলনে রূপ নেয়। ধীরে ধীরে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। অবশেষে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, সমগ্র পূর্ববাংলায় সাধারণ ধর্মঘট ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালনের কর্মসূচি ঘােষণা করা হয়।
বিপরীতে, পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রি নুরুল আমিন সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সকল প্রকারের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। ছাত্র সমাজ ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে সমাবেশ অনুষ্ঠান ও মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে।
ফলে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকে শহীদ হন। বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে
রচিত হয় এক রক্তাক্ত অধ্যায়। ভাষা আন্দোলন পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাঙালিদের প্রথম সফল বিদ্রোহ। এ আন্দোলনই বাঙালির চেতনামূলে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে দেয়। যার উপর ভিত্তি করে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বর ঘটে।
রচিত হয় এক রক্তাক্ত অধ্যায়। ভাষা আন্দোলন পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাঙালিদের প্রথম সফল বিদ্রোহ। এ আন্দোলনই বাঙালির চেতনামূলে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে দেয়। যার উপর ভিত্তি করে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বর ঘটে।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন সংগঠিত হলেও, এ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে পাকিস্তান সৃষ্টির বহু পূর্ব থেকেই। পূর্ব থেকেই উর্দু বনাম বাংলা নিয়ে মুসলিম নেতৃবৃন্দের মধ্যে ভাষা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ১৯০৬ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার সময়ও এ প্রশ্ন উঠে।
১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগের সভাপতি মি. জিন্নাহ উর্দুকে দলের দাফতরিক ভাষা হিসেবে প্রবর্তনের উদ্যোগ নেন, কিন্তু শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের নেতৃত্বে বাঙালি প্রতিনিধিদের বিরােধিতার মুখে সেদিনকার সে উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ১৯৪৬ সালে যখন স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ভারত স্বাধীন হচ্ছে এবং দুটি ভাগে বিভক্ত হচ্ছে, তখনই শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা।
১৯৪৭ সালের ১৮ মে, হায়দারাবাদে অনুষ্ঠিত মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের উদ্যোগে এক উর্দু সম্মেলনে সভাপতির ভাষণে কেন্দ্রীয় মুসলিম লীগ নেতা চৌধুরী খালেকুজ্জামান ঘােষণা করেন যে, উর্দু হবে পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা। জুলাই মাসে, আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দীন আহমদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করেন। কিন্তু ভাষাতাত্ত্বিক ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ‘আমাদের ভাষা সমস্যা’ শিরােনামে লেখা এক প্রবন্ধে ড. জিয়াউদ্দীনের সে বক্তব্য খন্ডন করে বাংলা ভাষার পক্ষে খুরধার যুক্তি তুলে ধরেন।
পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মােহাম্মদ আলী জিন্নার ঢাকা আগমন এবং ভাষা প্রশ্নে তার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ছিল তখন মূখ্য ঘটনা। রাজধানী করাচিতে ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব গৃহীত হয়। ফলে, পূর্ব বাংলার ছাত্র এবং বুদ্ধিজীবী মহলে তীব্র ক্ষোতের সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে, কমরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গণ আজাদীলীগ, যুবলীগ, অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্ব তমুদ্দিন মজলিশ এবং তৎকালীন যুবনেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ববাংলা মুসলিম ছাত্রলীগ গঠিত হয়।
এ সময়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক নুরুল হক ভূইয়াকে আহবায়ক করে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। তারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করেন ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাকে গণপরিষদের ব্যবহারিক ভাষা হিসেবে গ্রহণের প্রস্তাব করেন।কিন্তু পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান তার বিরুদ্ধে তীব্র সমালােচনা করেন এবং গণ পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
প্রতিবাদস্বরুপ, ১৯৪৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি, পূর্ব বাংলার ছাত্ররা হরতাল ধর্মঘট পালন করে। ঐ দিন ছাত্ররা ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে মিছিল বের করে। পরে, আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এক প্রতিবাদ সভা। ছাত্র নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন শেখ মুজিব, শামসুল হক, মােহাম্মদ তােয়াহা, রনেশ দাশ গুপ্ত এবং অজিত গুহ। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ, ঢাকায় বিক্ষোভ ও ধর্মঘট এবং ১৩ মার্চ ঢাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বত:স্ফূর্ত ধর্মঘট পালিত হয়।
ফলে, পূর্ববাংলা প্রাদেশিক সরকার অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে। তারা গ্রহণ করে নানা রকম নিপীড়নমূলক তৎপরতা। বেশ কিছু ছাত্র নেতাকে গ্রেফতার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ছাত্র ও যুব নেতাদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয় শওকত আলী, কাজী গােলাম মাহবুব, শামসুল হক, অলি আহাদ এবং শেখ মুজিবকে। এমন পরিস্থিততে, ১৫ মার্চ পূর্ববাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন এবং রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের মধ্যে ৮ দফা।
চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৮-দফা চুক্তি:
মূখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দীনের সাথে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাথে ৮-দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দফাগুলাে ছিল নিম্নরূপ-
- ১. ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮ থেকে বাংলা ভাষার প্রশ্নে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছেল তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তিদান করা হবে।
- ২. পুলিশ কর্তৃক অত্যাচারের অভিযােগ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রদান করবেন।
- ৩. ১৯৪৮ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে, পূর্ববাংলা সরকারের ব্যবস্থাপক সভায় বেসরকারি আলােচনার জন্য যেদিন নির্ধারিত হইয়াছে, সেই দিন বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার এবং একে পাকিস্তানের গণ পরিষদের এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পরীক্ষাদিতে উর্দুর সমমর্যাদা দানের জন্য একটি বিশেষ প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।
- ৪. এপ্রিল মাসে ব্যবস্থাপক সভায় এই মর্মে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে যে, প্রদেশের ভাষা হিসাবে ইংরেজি উঠে যাবে। এটি ছাড়া শিক্ষার মাধ্যম হবে বাংলা।
- ৫. আন্দোলনে যারা অংশ গ্রহণ করেছিল তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনাে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।
- ৬. সংবাদপত্রের উপর হইতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হইবে।
- ৭. ২৯ ফেব্রুয়ারি হতে পূর্ববাংলার যেসব স্থানে ভাষা আন্দোলনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে সেখান হতে তা প্রত্যাহার করা হবে।
- ৮. সংগ্রাম পরিষদের সাথে আলােচনার পর আমি (মুখমন্ত্রী) এ ব্যাপারে নি:সন্দেহ হয়েছি যে, এই আন্দোলন রাষ্ট্রের দুশমনদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় নি।
ভাষা আন্দোলনের দ্বিতীয় বা চূড়ান্ত পর্ব (১৯৫২)
১৯৪৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃত্যু হলে খাজা নাজিমউদ্দিন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হন। এ সময় পূর্ববাংলার জনগণ আশা করেছিল, এবার হয়ত বাংলা ভাষার স্বীকৃতি পাওয়া যাবে। কিন্তু, তিনি ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য হলেও বাঙালির স্বার্থ কখনও দেখেননি।
১৯৪৯ সালের মার্চ, পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ সংবিধানের মৌলিক বিষয় নিয়ে রিপাের্ট তৈরির উদ্দেশ্যে ২৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়, যা ‘মূলনীতি কমিটি' নামে অভিহিত ছিল। কমিটিতে মৌলভী তমিজউদ্দিন খান সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান সহ-সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান গণ পরিষদে মূলনীতি কমিটির প্রথম বা অন্তর্বর্তীকালীন রিপাের্ট পেশ করেন।
এখানেও, তিনি উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলেন। এর প্রতিবাদে পূর্ববাংলায় আবারও তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয় । ১৯৫১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী ভাষার ভিত্তিতে পাকিস্তানের জনগণের শতকরা হার ছিল নিম্নরূপ:
- বাংলা = ৫৬.৪০%
- পাঞ্জাবি = ২৮.৫৫%
- পশতু = ৫.৪৭%
- উর্দু = ৩.২৭%
- বেলুচি = ১.২৯%
- ইংরেজি = ০.০২%
- অন্যান্য = ১.৫২%
ফলে, গণ পরিষদে লিয়াকত আলী খানের রিপাের্টের উপর আলােচনা স্থগিত হয়ে যায়। ১৯৫০ সালের ৪ ও ৫ নভেম্বর, ঢাকায় আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে একটি গ্রান্ড ন্যাশনাল কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয় । এখানে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করা হয়।
এ সময় পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা না করার চক্রান্ত করে বাংলা ভাষায় আরবি হরফ প্রবর্তনের প্রস্তাব দেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এমন চক্রান্তের বিরুদ্ধে ১৯৫০ সালের অক্টোবর মাসে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এক বিবৃতি প্রদান করেন। যদিও, এর পূর্বে মাওলানা আকরাম খার সভাপতিত্বে গঠিত পূর্ববাংলা ভাষা সংস্কার কমিটি’ এক রিপাের্টে বাংলা ভাষায় আরবি হরফের ব্যবহার ২০ বছর স্থগিত রাখার সুপারিশ করে।
১৯৫০ সালের ৭ ডিসেম্বর, পাকিস্তান সরকারের ভাষা কমিটির রিপাের্টে পূর্ববাংলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উর্দুকে দ্বিতীয় ভাষারূপে পাঠ করার সুপারিশ করা হয়। এ সুপারিশের প্রেক্ষিতে বাঙালি জনগণ চরমভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের মৃত্যু হলে খাজা নাজিমউদ্দীন গভর্নর জেনারেল পদ ছেড়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন।
কিন্তু ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি, ছাত্র সমাজের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি ভঙ্গ করে পল্টন ময়দানের ভাষণে নতুন প্রধানমন্ত্রীও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার কথা ঘােষণা করেন। প্রতিবাদে ১৯৫২ সালের ৩১ জানুয়ারি, কাজী গােলাম মাহবুবুকে আহবায়ক করে ‘সৰ্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করা হয়।
৪ ফেব্রুয়ারি হরতাল পালিত হয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে অনুষ্ঠিত ছাত্র সমাবেশে ঠিক করা হয়। ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘পতাকা দিবস’ পালন করা হবে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র জনতা প্রাদেশিক পরিষদ ভবনে গিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি পেশ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৫২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বন্দী অবস্থায় শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিন আহমদ ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা’ এবং রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন।
সরকার ১৮ ফেব্রুয়ারি শখ মুজিব ও মহিউদ্দিন আহমেদকে অনশনরত অবস্থায় ফরিদপুর জেলে স্থানান্তর করে। আন্দোলন দাবানলের মত সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এরুপ পরিস্থিতিতে, পূর্ববাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমীন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন এবং সকল প্রকার শােভাযাত্রা, মিছিল ও সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘােষণা করেন। কিন্তু বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হােস্টেলের সম্মুখ থেকে ছাত্র সমাজ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে পুলিশ তাতে গুলি চালায়।
পলিশের নির্বিচার গুরিতে শহীদ হয় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এবং শ্রমিক আউয়ালসহ নাম না জানা অনেক মায়ের সন্তান। বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে রচিত হল এক রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের। বাধ্যহয়ে পশ্চিমা শাসকগােষ্ঠী বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নিতে সম্মত হয়। এবং ১৯৫৬ সালের পাকিস্তানের ১ম সংবিধানে তা স্বীকৃতি লাভ করে।
তথ্যসূত্র
১. হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ: রাজনীতি, সরকার, ও শাসনতান্ত্রিক উন্নয়ন।
২. বদরুদ্দীন ওমর, পূর্ববাংলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি।
৩. স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের ইতিহাস।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link