পিগমি কারা
মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে বাস করা পৃথিবীর সবচেয়ে খর্বাকার জাতি হচ্ছে পিগমি। পিগমি আদিবাসী অন্যন্য নৃগোষ্ঠিদের থেকে স্বতন্ত্র্য একটি জাতি, যারা তাদের প্রাচীন জীবনধারা এখনও বজায় রেখেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে খর্বাকার বা খাটো জাতি হচ্ছে পিগমি। তাদের উচ্চতা সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ হাত পর্যন্ত হয়।
পিগমি মূলত মধ্য আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, উগান্ডা, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কঙ্গো, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ক্যামেরুন, বোতসোয়ানা এবং নামিবিয়ার প্রাচীন আদিবাসী। এছাড়াও ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ এবং নিউগিনিতে ও কিছু পিগমি বাস করে।
পিগমি অর্থ
পিগমি শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ পিগমায়োস থেকে, যার অর্থ ‘কনুই পর্যন্ত’। এটি ব্যবহৃত হত খাটো আকৃতির কোন বস্তু বোঝাতে। পিগমিরা পৃথিবীর সবচেয়ে খর্বাকৃতি সম্প্রদায়, যাদের উচ্চতা গড়ে সাড়ে চার হাত।
পিগমি জাতি খাটো কেন হয়?
পিগমিদের এই খাটো আকারের বিষয়টি নিয়ে গবেষকরা ব্যাখ্যা করেন যে, অত্যাধিক বৃষ্টিপাত প্রবণ এলাকায় বসবাসের কারণে, তারা ভিটামিন ডি অভাবজনিত রোগে ভোগে। সূর্যের তাপের স্বল্পতার ধরুন মানুষের ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরি হতে পারেনা এবং পরিমিত খাওয়ার ফলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে, তাদের হাড়ের বৃদ্ধিতে বাধাঁ প্রাপ্ত হয়।
পিগমিদের খর্বাকার হওয়ার অন্যান্য ব্যাখ্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে খাদ্যের অভাব, মাটিতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কম, ঘন জঙ্গলে চলাচল, উত্তাপ এবং আর্দ্রতার সাথে অভিযোজিত হওয়া এবং বেশি মৃত্যুহারে দ্রুত প্রজনন।
এছাড়াও, বৃদ্ধি হরমোন রিসেপ্টর এবং গ্রোথ হরমোনের এনকোডিং জিনগুলোর অস্বাভাবিকভাবে কম মাত্রার থাকার কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। পিগমি পুরুষেরা নারীদের তুলনায় ১০ সেন্টিমিটার উচ্চতা বেশি হয়। তাদের চুল কোঁকড়ানো, প্রশস্ত চীবুক, সমতল নাক এবং বড় বড় চোখ বিদ্যামান।
বিশ্বে প্রায় ১২০০০০ পিগমি উপজাতি রয়েছে, যাদের বেশিরভাগ ক্যামেরুনের আটলান্টিক মহাসাগরের নিকটবর্তী বনাঞ্চলে বাস করে। ছোট পিগমি উপজাতি গ্রুপগুলো রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক কঙ্গো ইত্যাদি অঞ্চলে বাস করে।
জীবনযাপন
এখনও তারা আদিম জীবনযাপন করছে। পিগমিরা তাদের বেশিরভাগ সময় গভীর বনে শিকার এবং ফলের গাছ সংগ্রহ করতে ব্যয় করে। পিগমিরা কোন ধরনের টাকার ব্যবহার করে না।
তারা তাদের শিকার করা বস্তুগুলো অন্যন্য দলের সাথে বিনিময় করে থাকে। বাচ্চাদের শিকার এবং সংগ্রহের শিক্ষা দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। পিগমি মহিলারা সাধারনত মাছ ধরতে এবং বাড়িঘর নির্মানে ব্যস্ত থাকে। তারা কাঠ এবং পাথরের তৈরি বর্শা দিয়ে শিকার করে। দ্রুতবেগে গাছে উঠার জন্যও পিগমিরা বিখ্যাত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link