স্যাটেলাইট কি? এর প্রকার ও ব্যবহার

স্যাটেলাইট প্রযুক্তি বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দিয়েছি। এর মাধ্যমে যোগাযোগ থেকে শুরু করে আবহাওয়া তথ্য, সৌরজগতে গ্রহ অনুসন্ধান, এবং লাইভ সম্প্রচার সম্ভব হচ্ছে। 

বর্তমানে, ২৫০০ টিরও বেশি মনুষ্যসৃষ্ট স্যাটেলাইট পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই রাশিয়ান। স্যাটেলাইট ব্যবস্থা কী, কত প্রকার, এবং এটি কিভাবে কাজ তা নিয়ে আজকের আলোচনা। চলুন শুরু করা যাক,

স্যাটেলাইট কী

স্যাটেলাইট হচ্ছে মহাশূন্যে অবস্থিত কৃত্রিম উপগ্রহ, যা রেডিও মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে কাজ করে। স্যাটেলাইট বলতে বোঝায় পৃথিবীকে কেন্দ্র করে চারদিকে ঘূর্ণায়মান নির্দিষ্ট কাজে ব্যবহৃত কোনাে কৃত্রিম যন্ত্র, যা রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করে পৃথিবীর অর্বিটালে বা কক্ষপথে স্থাপন করা হয়।

তিন স্তরের রকেটের সাহায্যে কৃত্রিম উপগ্রহকে নির্দিষ্ট উচ্চতায় তুলে, পরে ভূ-পৃষ্ঠের সমান্তরালে নির্দিষ্ট বেগ দেয়া হয়। এতে স্যাটেলাইটটি পৃথিবীর চারপাশে কৃত্রিম গ্রহের মতাে ঘুরতে থাকে। এসব স্যাটেলাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দেশণা গ্রহণ করে, সে অনুপাতে কাজ করে, এবং পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ কক্ষে তথ্য প্রেরণ করে।


স্যাটেলাইট কি? এর প্রকার ও ব্যবহার, azhar bd academy

সৌরজগতে প্রতিটি গ্রহের কমপক্ষে একটি প্রাকৃতিক উপগ্রহ রয়েছে। এসব উপগ্রহ সেই গ্রহকে প্রদক্ষিণ করে। উদাহরণস্বরূপ, শনির অন্তত ৫৩টি প্রাকৃতিক উপগ্রহ রয়েছে, চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। তবে, কৃত্রিম উপগ্রহ ২০ শতকের মাঝামাঝির আগে বাস্তবে পরিণত হয়নি। প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহটি ছিল রাশিয়ার স্পুটনিক, যেটি ৪ অক্টোবর, ১৯৫৭ সালে-এ উঠেছিল। 

এই কৃতিত্বের পরে, ৩ নভেম্বর ১৯৫৭ সালে, সোভিয়েত ইউনিয়ন স্পুটনিক ২ নামক আরও একটি বিশাল উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছিল, যা লাইকা নামক একটি কুকুর বহন করেছিল। 
৩১ জানুয়ারী, ১৯৫৮ সালে, মার্কিন যুক্তরাস্ট্র এক্সপ্লোরার ১ নামক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে, যার ভর ছিল ১৩ কেজি।

১৯৬০ এর দশকের শেষ পর্যন্ত, স্পুটনিকস এবং এক্সপ্লোরার ১ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে একটি মহাকাশ প্রতিযোগিতা চলছিল। ১৯৬৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন চাঁদে মানুষকে অবতরণ করতে মহাকাশ যান তৈরি করতেছিল, তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের প্রথম মহাকাশ স্টেশন, স্যালিউট ১ (Salyut 1) তৈরি করেছিল, যা ১৯৭১ সালে চালু হয়েছিল।

স্যাটেলাইটের প্রকারভেদ

কাজের উপর ভিত্তি করে স্যাটেলাইটকে ৯ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:


১. এষ্ট্রোনােমি স্যাটেলাইট
২. এটমসফিয়ারিক স্যাটেলাইট
৩. কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট
৪. নেভিগেশন স্যাটেলাইট
৫. রিকনাইসেন্স স্যাটেলাইট
৬. রিমােট সেনসিং স্যাটেলাইট
৭. সার্চ ও রেসকিউ স্যাটেলাইট
৮. স্পেস এক্সপ্লোরেশন স্যাটেলাইট
৯. ওয়েদার স্যাটেলাইট।

সুবিধা ও অসুবিধা

i. স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের সুবিধা

আধুনিক বিশ্বে যােগাযােগ ব্যবস্থায় স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। এ প্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবীর এক প্রান্তের সংঘটিত কোনাে ঘটনাকে অন্য প্রান্তে ন্যূনতম সময় ব্যবধানে সরাসরি দেখানাে যাচ্ছে। বড় বড় টেলিমিডিয়াগুলাে বিশ্বব্যাপী তাদের যােগাযােগ ব্যবস্থা চালু রাখছে তাদের টেলিকাস্টের মাধ্যমে। বিশ্ব পরিস্থিতি সাধারণ জনগণের কাছে অতি দ্রুত উপস্থাপিত হচ্ছে।

ii.স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের অসুবিধা

স্যাটেলাইটকে তার কক্ষপথে স্থাপনের জন্য যে উৎক্ষেপণ মান ব্যবহৃত হয় তা খুবই ব্যয়বহুল, যা বিশ্বের অধিকাংশ দেশের পক্ষেই মেটানাে সম্ভব নয়। অপরদিকে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে পড়ে। তদুপরি, স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের ফলে আন্তরাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়।

Do not enter any harmful link

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Do not enter any harmful link

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন