জি আই (GI) কি? বাংলাদেশের জি আই পণ্য সমূহ

জি আই কি?

জি আই হল ভৌগলিক নির্দেশক চিহ্ন যা কোন পণ্যের একটি নির্দিষ্ট উৎপত্তিস্থলের কারণে এর খ্যাতি বা গুণাবলী নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়। একটি GI তে সাধারণত উৎপত্তিস্থলের নাম (শহর, অঞ্চল বা দেশ) অন্তর্ভুক্ত থাকে। GI এর পূর্ণরুপ হল  Geographical indication ভৌগলিক নির্দেশক। জি আই পণ্যের স্বীকৃতি দানকারী প্রতিষ্ঠান হলো WIPO (world intellectual property organization)।

কোনো দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ যদি কোনো পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব রাখে, তাহলে সেটাকে সেই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর জিআই নিবন্ধন দেয়।

২০১৬ সালে, জামদানি বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বমোট ২২টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি লাভ করে।

বাংলাদেশের জি আই পণ্য

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত, বাংলাদেশের জিআই পণ্য সর্বমোট ২২ টি। বাংলাদেশের এ পর্যন্ত স্বীকৃতি প্রাপ্ত জি আই পণ্য সমূহ一 যেমন জামদানি, ইলিশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম, বিজয়পুরের সাদা মাটি, দিনাজপুর কাটারীভোগ, কালিজিরা, রংপুরের শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই মসলিন, বাগদা (চিংড়ি), ফজলি আম, শেরপুরের তুলশীমালা ধান, 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম, বগুড়ার দই, বাংলাদেশের সিলেটের শীতলপাটি, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ীর চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল এবং সর্বশেষ ২২ তম জি আই পণ্য টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি।

এছাড়া জিআই সনদ পাওয়ার জন্য পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে (ডিপিডিটিতে) ১৪টি পণ্যের আবেদন জমা পড়েছে। এগুলো হলো যশোরের খেজুর গুড়, নরসিংদীর লটকন, অমৃতসাগর কলা, জামালপুরের নকশিকাঁথা, মধুপুরের আনারস, সুন্দরবনের মধু, মৌলভীবাজারের আগর-আতর, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মুক্তাগাছার মণ্ডা, রাজশাহীর মিষ্টিপান, শেরপুরের ছানার পায়েশ, ভোলার মহিষের কাঁচা দুধ, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা এবং নওগাঁর নাগ ফজলি আম।

সর্বশেষ হালনাগাত: (০৭/০২/২০২৪)

জি আই (GI) কি? বাংলাদেশের জি আই পণ্য সমূহ, azhar bd academy



জি আই পণ্য ২০২৪ তালিকা


১. জামদানি:
বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃতিপ্রাপ্ত জি আই বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হচ্ছে  জামদানি।এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (BSCIC)।
নিবন্ধিত হয়: ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
সনদ প্রাপ্তি: ১৭ নভেম্বর ২০১৬।


২. ইলিশ:
দ্বিতীয় ভৌগলিক নিদের্শক (জিআই) পণ্য হলো 'ইলিশ'। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হল মৎস্য অধিদপ্তর।
নিবন্ধিত হয়: ১৩ নভেম্বর ২০১৬।
সনদ প্রাপ্তি: ১৭ আগষ্ট ২০১৭।

৩. চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম:
তৃতীয় ভৌগলিক নিদের্শক (জিআই) পণ্য হল 'চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম'। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI)।
নিবন্ধিত হয়: ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
সনদ প্রাপ্তি: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯।

৪. বিজয়পুরের সাদা মাটি:
চতুর্থ ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য 'বিজয়পুরের সাদা মাটি'। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নেত্রকোনা।
নিবন্ধিত হয়: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১।

৫. দিনাজপুর কাটারীভোগ:
পঞ্চম ভৌগলিক নিদের্শক (জিআই) পণ্য 'দিনাজপুর কাটারীভোগ'। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI)।
নিবন্ধিত হয়: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১।


৬. বাংলাদেশ কালিজিরা:
ষষ্ঠ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য 'কালিজিরা'। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান :বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI)।
নিবন্ধিত হয়: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
সনদ প্রাপ্তি : ১৭ জুন ২০২১।

৭. রংপুরের শতরঞ্জি:
সপ্তম ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য 'রংপুরের শতরঞ্জি'। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প।
নিবন্ধিত হয়: ১১ জুলাই ২০১৯।
সনদ প্রাপ্তি : ১৭ জুন ২০২১।


৮. রাজশাহী সিল্ক:
অষ্টম ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য 'রাজশাহী সিল্ক'। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড (BSDB)।
নিবন্ধিত হয়: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১।

৯. ঢাকাই মসলিন:
নবম ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য ‘ঢাকাই মসলিন'। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড (BHB)।
নিবন্ধিত হয়: ২ জানুয়ারি ২০১৮।
সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১।


১০. বাগদা চিংড়ি:
দশম ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য ‘বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি’। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান মৎস অধিদপ্তর।
নিবন্ধিত হয়: মে ২০১৯।
সনদ প্রাপ্তি: ২৪ এপ্রিল ২০২২।

১১. ফজলি আম:
এগারোতম ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য ফজলি আম। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ফল গবেষণা ইনস্টিটিউট রাজশাহী। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ফল গবেষণা কেন্দ্র ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এসোসিয়েশন। 
নিবন্ধিত হয়: ৯ মার্চ ২০১৭।
সনদ প্রাপ্তি: ২৫ এপ্রিল ২০২৩।

১২. শেরপরের তুলশীমালা ধান:
বারোতম জিআই পণ্য শেরপুরের তুলশীমালা ধান। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসক, রংপুর। 
নিবন্ধিত হয়: ১১ এপ্রিল ২০১৮।
সনদ প্রাপ্তি: ১২ জুন ২০২৩।

১৩. চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম:
তেরোতম জিআই পণ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
নিবন্ধিত হয়: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
সনদ প্রাপ্তি: ২৬ জুন ২০২৩

১৪. চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম:
চৌদ্দতম জিআই পণ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ। 
নিবন্ধিত হয়: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
সনদ প্রাপ্তি: ২৬ জুন ২০২৩

১৫. বগুড়ার দই:
পনেরোতম জিআই পণ্য বগুড়ার দই। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, বগুড়া জেলা শাখা।
নিবন্ধিত হয়: ১ জানুয়ারি ২০১৮
সনদ প্রাপ্তি: ২৬ জুন ২০২৩

১৬. বাংলাদেশের সিলেটের শীতলপাটি:
ষোলোতম জিআই পণ্য বাংলাদেশের সিলেটের শীতলপাটি।
সনদ প্রাপ্তি: ২০ জুলাই ২০২৩

১৭. নাটোরের কাঁচাগোল্লা:
সতেরোতম জিআই পণ্য নাটোরের কাঁচাগোল্লা।
সনদ প্রাপ্তি: ৮ আগস্ট ২০২৩

১৮. বাংলাদেশ ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল: 
আটারোতম জি আই পণ্য বাংলাদেশ ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল।

১৯. টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ীর চমচম: 
উনিশতম জি আই পণ্য টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ীর চমচম। 

২০. কুমিল্লার রসমালাই: 
বিশতম জি আই পণ্য কুমিল্লার রসমালাই।

২১. কুষ্টিয়ার তিলের খাজা: 
একুশতম জি আই পণ্য কুষ্টিয়ার তিলের খাজা।

২২. টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি: 
সর্বশেষ ২২ তম জি আই পণ্য টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি।



Do not enter any harmful link

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Do not enter any harmful link

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন