বাংলাদেশ সংবিধানের মূলনীতি

সংবিধানের মূলনীতি

বাংলাদেশ সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার ৪ টি মূলনীতি রয়েছে যেমন, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, এবং ধর্মনিরপেক্ষতা। এগুলো রাষ্ট্রের দর্পন স্বরুপ। এই চারটি মূলনীতি দুষ্পরিবর্তনীয় (অর্থাৎ সহজে পরিবর্তন করা যাবে না)। এছাড়া আরো অনেকগুলো মূলনীতি রয়েছে যেমন, মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা, গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আন্তর্জাতিক নীতি, অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা, মালিকানার নীতি, জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা, সুযোগের সমতা ইত্যাদি।

সংবিধানের মূলনীতি সমূহের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে ৮ থেকে ২৫ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলো সন্নিবেশিত রয়েছে। সংবিধানের মূল স্তম্ভ হচ্ছে এই মূলনীতি সমূহ। সংবিধানে ৪ টি প্রধান মূলনীতি নিম্মে আলোচনা করা হল। 


বাংলাদেশ সংবিধানের মূলনীতি, azhar bd academy

রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি

জাতীয়তাবাদ (Nationalism)
সংবিধানের অন্যতম একটি মূলনীতি জাতীয়তাবাদ। জাতীয়তা একটি ধারণা মাত্র। কোন জাতি বা গোষ্ঠীর ঐক্য ও সংহতির প্রবল অনুভূতি যা চেতনা তৈরি করে একটি নির্দিষ্ট জনসমষ্টিকে অন্য একটি জনসমষ্টি হতে আলাদা করতে পারে, তাই জাতীয়তাবাদ। জাতীয়তাবাদের উপাদান যেমন ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, খাদ্যভাব, এবং ভৌগলিক সীমারেখা। 

এসব উপাদানের মাধ্যমে একটি জাতিকে অপর একটি জাতি থেকে আলাদা করা যায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি হবে ভাষা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন। যে ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করেছে। 


সমাজতন্ত্র (Socialism)
সমাজতন্ত্রের মাধ্যমে মূলত একটি শোষণহীন, ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান সুযোগ, সুবিধা রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। এই  উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।

গণতন্ত্র (Democracy)
সংবিধানে গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে সংগ্রাম করে আজ স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত, সেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই হবে রাষ্ট্রে মূল স্তম্ভ। জনেগণের মোলিক অধিকার, ভোটাধিকার প্রয়োগ, এবং রাষ্ট্রের প্রশাসনিক সকল পর্যায়ে অংশগ্রহনের মাধ্যমে গণতন্ত্র চর্চা হবে।

ধর্মনিরপেক্ষতা (Secularism)
সংবিধানে বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। রাষ্ট্র নির্দিষ্টভাবে কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দিবে না। সকল ধর্ম সমান ও সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। কোন ব্যক্তি তারঁ ধর্মের জন্য যেন কোনরুপ বৈষম্যের শিকার না হয়, তার জন্য এই ধর্মনিরপেক্ষতা। কোন বিশেষ ধর্ম পালকারী ব্যক্তির প্রতি কোনরুপ নির্যাতন, নিপীড়ন, এবং বৈষম্য বিলোপ করা হবে।

Do not enter any harmful link

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Do not enter any harmful link

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন