সহজভাবে বলতে গেলে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করার ক্ষমতাকে অভিশংসন (Impeachment) বলে। সংবিধান লঙ্গন কিংবা গুরুতর অভিযোগে রাষ্ট্রপতির বিচার (অভিশংসন) করা যাবে। এর জন্য সংসদের মোট সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের সম্মতি বা স্বাক্ষর লাগবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন গনতান্ত্রিক দেশে অভিশংসন পদ্ধতি চলমান রয়েছে।
মার্কিন সংবিধানের অনুচ্ছেদ II, ধারা 4 অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বেসামরিক কর্মকর্তাদের, রাষ্ট্রদ্রোহ, ঘুষ, বা অন্যান্য বড় অপরাধ এবং অপকর্মের জন্য নিজ কার্যালয় থেকে অপসারণ করা হবে।
অভিশংসিত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করতে মার্কিন সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশের ইতিবাচক ভোটের প্রয়োজন হয়। সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশের ভোটে দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তিস্বরূপ অভিযুক্তকে অফিস বা পদ থেকে অপসারণ করা হয়। অভিশংসনের বিরুদ্ধে কোন আপিলের নিয়ম নেই।
মাত্র তিনজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট -এন্ড্রু জনসন, বিল ক্লিনটন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস কর্তৃক অভিশংসিত হয়েছেন এবং সকলেই সিনেট দ্বারা খালাস পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সংবিধানে ৫২নং অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির অভিশংসনের কথা উল্লেখ আছে। সেখানে বলা আছে,
৫২। (১) এই সংবিধান লংঘন বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসিত করা যাবে। এর জন্য সংসদের মোট সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের স্বাক্ষরে অনুরূপ অভিযোগের বিবরণ লিপিবদ্ধ করে একটি প্রস্তাবের নোটিশ স্পীকারের নিকট প্রদান করতে হবে। স্পীকারের নিকট অনুরূপ নোটিশ প্রদানের দিন হতে চৌদ্দ দিনের পূর্বে বা ত্রিশ দিনের পর এই প্রস্তাব আলোচনা করা যাবে না। এরকম সময়ে সংসদ অধিবেশনরত না থাকিলে স্পীকার অবিলম্বে সংসদ আহবান করবেন।
(২) এই অনুচ্ছেদের অধীন কোন অভিযোগ তদন্তের জন্য সংসদ কর্তৃক নিযুক্ত বা আখ্যায়িত কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কর্তৃপক্ষের নিকট সংসদ রাষ্ট্রপতির আচরণ গোচর করতে পারবেন।
(৩) অভিযোগ বিবেচনাকালে রাষ্ট্রপতির উপস্থিত থাকার এবং প্রতিনিধি প্রেরণের অধিকার থাকবে।
(৪) অভিযোগ বিবেচনার পর, মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে অভিযোগ যথার্থ ঘোষণা করে সংসদ কোন প্রস্তাব গ্রহণ করলে প্রস্তাব গৃহীত হবার তারিখে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link