তড়িৎ বিশ্লেষণ কি?
তড়িৎ বিশ্লেষণ (Electrolysis) হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি রাসায়নিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার জন্য একটি পদার্থের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক প্রবাহ প্রবাহিত হয়।
অর্থাৎ তড়িৎ বিশ্লেষণ হল একটি স্বতঃস্ফূর্ত রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংঘটিত করার জন্য বৈদ্যুতিক প্রবাহের ব্যবহার।
তড়িৎ বিশ্লেষণের সংজ্ঞা মতে, তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থের দ্রাবনের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে রাসায়নিক বিয়োজন ঘটে নতুন যে রাসায়নিক ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাকে তড়িৎ বিশ্লেষণ বলে।
তড়িৎদ্বারের অ্যানোডে জারণ ঘটে এবং ক্যাথোডে বিজারণ ঘটে। তড়িৎ প্রবাহের ফলে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে এবং তাপের উদ্ভব ঘটে। তড়িৎ প্রবাহ অ্যানোড থেকে ক্যাথোডের দিকে প্রবাহিত হয়।
উদাহরণস্বরুপ, সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণে বিদ্যুত প্রবাহ চালনা করলে অ্যানোডে ক্লোরিন গ্যাস এবং ক্যাথোডে সোডিয়াম ধাতু উতপন্ন হয়।
তড়িৎ বিশ্লেষণের সূত্র
মাইকেল ফ্যারাডে ১৮৩২ সালে তড়িৎ বিশ্লেষণ সম্পর্কে দুটি সূত্র আবিষ্কার করেন যা ফ্যারাডের তড়িৎ বিশ্লেষণ সূত্র নামে পরিচিত।
ফ্যারাডের প্রথম সূত্র
‘‘তড়িৎ বিশ্লেষণের ফলে কোনো তড়িৎদ্বারে সংঘটিত রাসায়নিক বিক্রিয়ার পরিমাণ (উৎপন্ন বা দ্রবীভূত পদার্থের ভর) তড়িৎ বিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মোট বিদ্যুৎ এর সমানুপাতিক।’’
অর্থাৎ, তড়িৎ বিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে Q কুলম্ব পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ার ফলে, তড়িৎদ্বারে W গ্রাম ভরের একটি বস্তু সঞ্চিত বা দ্রবীভূত হয়, তবে ফ্যারাডের প্রথম সূত্রানুযায়ী–
W ∝ Q
বা, W = ZQ …………… (1)
এখানে, Z = সমানুপাতিক ধ্রুবক যা পদার্থের ধর্মের উপর নির্ভর করে। একে পদার্থের তড়িৎ রাসায়নিক তুল্যাংক বলা হয়। Z হল ১ কুলম্ব চার্জকে বাইপাস করে তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় ইলেক্ট্রোডে জমা হওয়া পদার্থের ভর।
ফ্যারাডের দ্বিতীয় সূত্র
" গলিত বা দ্রবীভূত বিভিন্ন তড়িৎ বিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বৈদ্যুতিক চার্জ প্রবাহিত করার সময় যে কোন ইলেক্ট্রোডে জমা হওয়া পদার্থের ভর তার রাসায়নিক সমতুল্য ওজনের সমানুপাতিক।" তবে ফ্যারাডের দ্বিতীয় সূত্রানুযায়ী–
w ∝ E
যেখানে,
w = পদার্থের ভর
E = পদার্থের সমতুল্য ওজন
এটিকে এভাবেও প্রকাশ করা যেতে পারে– w1/w2=E1/E2
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link