নয়া বা নব্য সাম্রাজ্যবাদ অতীতের মতো সাম্রাজ্যবাদ না, যেখানে কোন একটি ধনী রাষ্ট্র কর্তৃক অন্য দেশ দখল অথবা সেই দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য আরোপের মাধ্যমে কর্তৃত্ব কায়েম করতো।
১৫-১৯ শতকের মধ্যে, সাম্রাজ্যবাদ সমগ্র পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করেছিল। সর্বপ্রথম ইউরোপীয় শক্তিগুলো তাদের নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন দেশ শক্তির মাধ্যমে দখল করে শাসন করতো।
২০ শতকের প্রথম দিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ইউরোপীয় শক্তিগুলোও নিজেদের দেশ সম্প্রসারণে জন্য অন্য দেশের উপর শক্তি প্রয়োগ করতো। ইতিহাস জুড়ে, অনেক দেশ, আদিবাসী সমাজ ও সংস্কৃতি সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণের দ্বারা ধ্বংস হয়ে গেছে।
নয়া সাম্রাজ্যবাদ
নয়া সাম্রাজ্যবাদ (Neoimperialism) হল একটি আধুনিক সাম্রাজ্যবাদী অনুশীলন, যার মাধ্যমে উন্নত দেশগুলো ছোট দেশগুলোতে আধিপত্য কায়েম করার জন্য শক্তি এবং প্রভাব ব্যবহার করে। অর্থাৎ, নব্য সাম্রাজ্যবাদ হল আইনি চুক্তি, অর্থনৈতিক ক্ষমতা এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবের মাধ্যমে গরিব এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কর্তৃত্ব কায়েম করা।
উনিশ শতকের শেষভাগে, ইউরােপের প্রতিটি দেশেই শিল্পায়নের ফলে পুঁজিপতিদের হাতে প্রচুর মূলধন জমে যায়। সেই মূলধনের বিনিয়ােগ, কলকারখানার জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ এবং কারখানায় উৎপন্ন পণ্যাদি বিক্রির জন্য বাজার দখলকে কেন্দ্র করেই এই নয়া সাম্রাজ্যবাদের উৎপত্তি।
বিংশ শতাব্দীতে, বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, নয়া সাম্রাজ্যবাদ বিশ্ব রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং অর্থনৈতিক আধিপত্য নয়া সাম্রাজ্যবাদের অন্যতম উদাহরণ। বিশ্বে অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন এবং একচেটিয়া পুঁজিবাদের মাধ্যমে এটি কায়েম করতেছে।
বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক সংস্থা (বিশ্ব ব্যাংক, জাতীসংঘ, আইএমএফ), জোট (ন্যাটো), মার্কিন ডলার, একচেটিয়া পুঁজি, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, এবং উৎপাদন মাধ্যম ইত্যাদি ব্যবহার করে সারা বিশ্বে নয়া সাম্রাজ্যবাদ কায়েম করছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link