পিং পং ডিপ্লোম্যাসির (Ping pong diplomacy) মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলা ২০ বছরের বৈরি সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটে।
১৯৪৯ সালে মাও সেতুং-এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট চীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে চীন এবং পুঁজিবাদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক ফাটল ধরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, কূটনৈতিক নীরবতা এবং শীতল যুদ্ধের কারণে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন আমেরিকান প্রতিনিধি দল চীনে পা রাখেনি। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একদম তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল।
একই সময়ে, চীন-সোভিয়েত সীমান্তে একের পর এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ দুই সমাজতান্ত্রিক দেশ ক্রমশই একে অপরের শত্রুতে পরিণত হচ্ছিল। ফলে, আমেরিকার অন্যতম শত্রু সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে চীনের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যায়। মাও বিশ্বাস করেছিলেন যে, আমেরিকানদের সাথে চীনের সম্পর্ক রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করতে পারে। অপরদিকে, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন সোভিয়েত ইউনিয়নকে এক হাত নিতে চীনের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপনে জোর দিচ্ছিল।
এরই ধারাবাহিকতায়, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল, চীনের আমন্ত্রণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেবিল টেনিস (পিং পং) দল চীন সফর করে। যা পরবর্তীতে, পিং পং ডিপ্লোম্যাসি হিসেবে সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করে।। পিং পং কূটনীতি" চীন-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে।
তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১৯৭১ সালে বেইজিং সফর করেন এবং ১৯৭৩ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন নিজেই চীন সফর করেন। এতে দু দেশের মধ্যে বৈরিতার অবসান ঘটে। পিং পং ডিপ্লোম্যাসির পর যুক্তরাষ্ট্র সমাজতান্ত্রিক চীনকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ফলে চীন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য পদ লাভ করে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link