পৃথিবীর মানুষের কাছে সবচেয়ে পরিচিত দুটি প্রাকৃতিক ঘটনা হলো― সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ।এটি নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক কৌতৃহল রয়েছে।
আমরা জানি যে, সৌরজগতে সূর্যকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে পৃথিবী, আবার পৃথিবীকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে চন্দ্র। এই আবর্তন চলার সময় কখনো কখনো সূর্য, পৃথিবী এবং চন্দ্র একই সরলরেখাতে অবস্থান নেয়। আর তখনই চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ সংগঠিত হয়। পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলে এমনটি ঘটে থাকে।
সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের মধ্যে মূল পার্থক্য হল―সূর্য গ্রহণের সময় সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে চন্দ্র অবস্থান করে। চন্দ্রগ্রহণের সময় সূর্য ও চন্দ্রের মাঝখানে পৃথিবী থাকে।
সূর্যগ্রহণ কি?
আবর্তনের সময় যখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে চন্দ্র অবস্থান নেয়, তখন সূর্যগ্রহণ (Solar Eclipse) ঘটে। সেসময় পৃথিবীতে অবস্থানরত পর্যবেক্ষকের দর্শন-সাপেক্ষে সূর্য, চন্দ্র এর আড়ালে চলে যায়― ফলে কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলো দেখা যায় না। সূর্যের আকার অনেক বড় হওয়াতে সূর্যগ্রহণের সময়, চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢাকতে পারে না।
চন্দ্রগ্রহণ কি?
আবর্তনের সময় যখন চন্দ্র ও সূর্যের মাঝখানে পৃথিবী অবস্থান করে, তখন চন্দ্রগ্রহণ (lunar Eclipse) ঘটে। পৃথিবীর ছায়ার জন্য চাঁদে সূর্যের আলো পৌঁছায় না, ফলে চাঁদকে কিছু সময়ের জন্য দেখা যায় না।
অর্থাৎ পৃথিবী পৃষ্ঠের কোন দর্শকের কাছে চাঁদ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়।
সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের পার্থক্য
১. পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চন্দ্র আসলে, তখন সূর্যগ্রহণ (Solar Eclipse) হয়। অন্যদিকে, চন্দ্র ও সূর্যের মাঝখানে পৃথিবী অবস্থান করলে, তখন চন্দ্রগ্রহণ (lunar Eclipse) হয়।
২. আটারো মাসে একবার সূর্যগ্রহণ হয়। বিপরীতে, বছরে দুবার চন্দ্রগ্রহণ হয়।
৩. সূর্যগ্রহণ প্রায় ৫-৭ মিনিট স্থায়ী হয়। পক্ষান্তরে, চন্দ্রগ্রহণ এক ঘণ্টার মত স্থায়ী হয়।
৪. সূর্যগ্রহণ দিনের বেলায় ঘটে। অন্যদিকে, চন্দ্রগ্রহণ রাতের বেলায় ঘটে।
৫. সূর্যগ্রহণ অমাবস্যার তিথিতে ঘটে। বিপরীতে, চন্দ্রগ্রহণ ঘটে পূর্ণিমার সময়।
৬. সূর্যগ্রহণের সময় সরাসরি তাকালে দৃষ্টিশক্তি হারানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে কারণ এটি রেটিনার ক্ষতি করে। পক্ষান্তরে, খালি চোখে চন্দ্রগ্রহণ দেখা ক্ষতিকারক নয় কারণ এতে চোখের কোনো ক্ষতি হয় না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link