প্রাচীনকালে, নৌচলাচলের জন্য নাবিকরা আকাশের উপর নির্ভর করত। নাবিকরা রাতের আকাশে নক্ষত্রপুঞ্জ ব্যবহার করে দিক ও সময় নির্ধারণ করতো। এছাড়া তখন কম্পাস, মানচিত্র এবং অ্যাস্ট্রোল্যাবের মাধ্যমেও স্থান, সময় ও দিক নির্ণয় করা হত। আধুনিক যুগে, প্রযুক্তিগত এবং ইলেকট্রনিক অগ্রগতির ফলে আমরা বিশ্বের কোথায় আছি তা সঠিকভাবে বোঝার জন্য শুধুমাত্র একটি সাধারণ জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) রিসিভার প্রয়োজন।
এই পোস্টে, আমরা জিপিএস কী, এটি কীভাবে কাজ করে, তা ব্যাখ্যা করব।
জিপিএস কি?
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (GPS) হল একটি মহাকাশ-ভিত্তিক স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম যা আবহাওয়ার অবস্থা নির্বিশেষে সঠিক অবস্থান, সময় এবং বেগ নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে সাধারণ গাড়ি থেকে শুরু করে এয়ারক্রাফট, জাহাজ, সাবমেরিন, ট্রেন এবং স্পেস শাটল সবই নেভিগেট করার জন্য জিপিএস ব্যবহার করে।
জিপিএস সিস্টেমের উপাদান
একটি জিপিএস সিস্টেম তিনটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত যেমন: স্যাটেলাইট, গ্রাউন্ড স্টেশন এবং রিসিভার।
স্যাটেলাইট নক্ষত্রের মতো কাজ করে এবং সবসময় সংকেত পাঠায়।
গ্রাউন্ড স্টেশনগুলি রাডার ব্যবহার করে স্যাটেলাইটের অবস্থান নিশ্চিত করে।
রিসিভার হল এমন একটি ডিভাইস যা ক্রমাগত স্যাটেলাইট থেকে সংকেত খোঁজে। রিসিভার চার বা ততোধিক স্যাটেলাইট থেকে তার দূরত্ব গণনা করলে, আপনি ঠিক কোথায় আছেন তা জানতে পারে।
জিপিএস কিভাবে কাজ করে?
GPS-এ তিনটি প্রধান অংশ রয়েছে: স্পেস সেগমেন্ট, কন্ট্রোল সেগমেন্ট এবং ইউজার সেগমেন্ট।
জিপিএস সিস্টেমে ২৪টি স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ রয়েছে যা পৃথিবীকে সুনির্দিষ্ট কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে। প্রতিটি স্যাটেলাইট প্রতি ১২ ঘন্টায় পৃথিবীর একটি সম্পূর্ণ কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করে। এই স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীতে স্থাপন করা গ্রাউন্ড স্টেটেশনে ক্রমাগত রেডিও সিগন্যাল পাঠাচ্ছে।
স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত সংকেত ব্যবহার করে রিসিভারের সঠিক স্থান, দিক ও গতি নির্ণয় করে। মূলত স্যাটেলাইট, গ্রাউন্ড স্টেশন এবং রিসিভার এই তিনটির সমন্বয়ে পৃথিবীর আকাশে, সমুদ্রে এবং যেকোনে স্থানে থাকা ব্যক্তির সঠিক অবস্থান ও বেগ জানা যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Do not enter any harmful link